জসিম উদ্দিনঃ সোনারগাঁও উপজেলোর বৈদ্যেরবাজার খেয়া ঘাট ইজারাদারদের বিরুদ্ধে টোল আদায়ের নামে ব্যাপক চাঁদাবাজী অভিযোগ উঠেছে। বৈদ্যেরবাজার খেয়া ঘাটে চাঁদাবাজদের সীমাহীন অত্যাচারে চরম ভাবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে কয়েকটি উপজেলার হাজার হাজার মানুষ।
সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে দ্বিতীয় বারের মত জনৈক জাকির হোসেন বৈদ্যেরবাজার খেয়াঘাট তার ভাগিনা সৈকতের নামে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে নির্র্দিষ্ট হারে টোল আদায়ের জন্য ইজারা পান। যাত্রীদের কাছ থেকে ২টাকা করে টোল আদায়ের কথা থাকলেও ইজারাদারদের ইচ্ছে মত আদায় করছে টোল। এ নিয়ে যাত্রী ও ইজারাাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত ভাগবিতান্ড ও হাতা হাতির ঘটনা ঘটছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে বৈদ্যেরবাজার খেয়া ঘাটের চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে চলছে সমালোচলার ঝড়।
মহিতুল ইসলাম হিরু, হাবিব খান ও সফর আলী নামের কয়েকটি ফেইসবুক আইডি থেকে ভুক্তভুগিদের পক্ষে বৈদ্যেরবাজার খেয়া ঘাটের অনিয়ম চাঁদা বাজদের বিরুদ্ধে লিখে আসছেন। খাবিব খান নামের একটি ফেইসবুক আইডিতে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে একাটি পোষ্ট দিয়েছেন কয়েক দিন আগে। তার পোষ্টে আড়াইহাজার ও মেঘনা উপজেলার ভুক্তভগিরা বিভিন্ন কমেন্ট করেছে। এদের হাত থেকে প্রতিকার পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অনেকেই। বৈদ্যেরবাজার ঘাটের অনিয়মের ঘটনা গণমাধ্যমে তুলে ধরার জন্য বিষেশ অনুরোধ করেন। তারা বলেন, বৈদ্যেরবাজার খেয়া ঘাট দিয়ে মেঘনা উপজেলার নলচর, চালিভাঙ্গা, রামপ্রসাদেরচর, মৈশারচর, চন্দনপুর, তুলতিুলি, মুগারচন, টিটিরচর, রাধানগর, সাপমার, তালতলি সহ ওই উপজেলার ও আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন, খাগকান্দা ইউনিয়নের শত শত লোক প্রতিদিন বৈদ্যেরবাজার খেয়া ঘাট দিয়ে যাতায়াত করেন। বিষেশ করে এই দুটি উপজেলার বেসিরভাগ লোকই ট্রলার বা স্প্রীর্ড বোর্ডের মাধ্য বৈদ্যেরবাজার খেয়া ঘাট দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। ইজারাদারা যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছে মত টোল আদায় করে থাকে বলেও অভিযোগ উঠেছে। টাকা কম হলেই যাত্রীদের দূব্যবহার ও হাতের ব্যাগ নিয়ে টানা টানি শুর করে বলেও অনেকের অভিযোগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যাত্রীদের সাথে থাাকা ব্যাগ, আইপি এস এর ব্যাটারি, কাঠ, টিন, বড়, সিমেন্ট সহ বিভন্ন মালামা থেকে ইজারাদাররা তাতের ইচ্ছে মত টোল আদায় করছে। ইজারাদারদের দাবিকৃত টাকা (চাঁদা) না দিলেই শুরু হয় যাত্রীদের হয়রানি ও নির্যাতন। যুদি বিদেশ থেকে কোন লোক দেশে আসে, আর ইজারাদারদের নজরে পড়লেই আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠে তার। বিদেশ ফেত যাত্রীদের কাছ থেকে ৮/১০ হাজার টাকা দাবি করে বসে। চাঁদা বাজদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে নানা ভাবে হয়রানি করা হয়। যাত্রীদের ব্যাগ নিয়ে করে টানা টানি। চাঁদাবাজরা প্রভাব খাটিয়ে অনেক যাত্রীকে শারীরিক ভাবেও নির্যাতন করে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেঘনা ও আড়াইহাজার উপজেলার একাধীক ব্যক্তি জানান,পিরোজপুর ইউনিয়নের পলিথিন জাকির নামে পরিচিত তার নিজস্ব লোক জন দিয়ে বৈদ্যেরবাজার খেয়া ঘাট ও মেঘনা নদী থেকে অবাধে চাঁদা উত্তোলন করে আসছে জাকির গং।
আরো জানান, যাত্রীদের বহনকৃত ব্যাগ বা লাগেছ থেকে ১’শ থেকে দেড়’শ টাকা ও বড় লাগেছ হলেতো কথাই নেই। টাকার হার ৩শ থেকে ৪ টাকা চাঁদা আদায় করে চাঁদাবাজরা ।
মেঘনা এলাকার আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানান, মসজিদের আইপিএসের ব্যাটারি নিয়ে বাড়ি থেকে সকালে এসে ৬০ টাকা দিতে হয়েছে। এখন আবার যাওয়ার জন্য ৬০ টাকা দিতে হবে। আমরা কোন দেশে বসবাস করছি। এ ধরনের অনিয়ম দেখারকি কেউনেই ?
নাম পকাশ না করা শর্তে একাধীক ট্রলার চালাক জানান, চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মানুষ। কেউ প্রতিবাদ করলেই মারধর শুরু করে ইজারাদারের লোক জন। তারা নিয়ম কানুন বহিঃভূত চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে। টোল আদায়ের নামে সব প্রকার নৌ-যান ও যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতিদিন কয়েকটি স্পটে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে নিচ্ছে তারা। চাঁদার অংক নিয়ে সাধারন ট্রলার চালকদের সাথে টোল ইজারাদারদের লালিত চাঁদাবাজরাদের সাথে মাঝে মধ্যে বাকবিতন্ড করতে দেখা যায়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে নানা ভাবে নির্যাতন করে ইজারাদারের লোক জন।
উল্লেখ্য, গত বছর সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সামনে বৈদ্যেরবাজার খেয়াঘাটের ইজারা বাতিল ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছিল এলাকাবাসী।
এব্যাপারে জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকারের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, বৈদ্যেরবাজার খেয়া ঘাটে অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ইজারাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
